আসর নামাজ কয় রাকাত

আসলামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক গণ আজ কে আমি নামাজ কি, আসরের নামাজের সময় কখন, আসর নামাজ কয় রাকাত, জুমার দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, আসরের নামাজের নিয়ত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন জেনে নিয়ে যাক..

নামাজ কি:

নামাজ বা নামায (ফার্সি: نماز) বা সালাত বা সালাহ (আরবি: صلاة) ইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ।

সালাত একটি সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির ইবাদত যার পদ্ধতি ‘ইসলামী শরী‘আতে পরিপূর্ণভাবে বর্ণিত হয়েছে। নামাজ ‘তাকবিরে তাহরিমা’ দ্বারা শুরু হয় ও ‘সালাম ফিরানো’ দ্বারা শেষ হয়’। নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয়।

প্রতিদিন একজন মুসলিমকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রথম ওয়াক্ত হল “ফজর নামাজ” সুবহে সাদিক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত এর ব্যপ্তিকাল। এরপর “যুহর ওয়াক্ত” বেলা দ্বিপ্রহর হতে “আসর ওয়াক্ত”-এর আগ পর্যন্ত যার ব্যপ্তি। তৃতীয় ওয়াক্ত “আসর ওয়াক্ত” যা সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। চতুর্থ ওয়াক্ত হচ্ছে “মাগরিব ওয়াক্ত” যা সূর্যাস্তের ঠিক পর পরই আরম্ভ হয় এবং এর ব্যপ্তিকাল প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট। “মাগরিব ওয়াক্ত” এর প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর আরম্ভ হয় “ইশা ওয়াক্ত” এবং এর ব্যপ্তি প্রায় “ফজর ওয়াক্ত”-এর আগ পর্যন্ত।

আসরের নামাজের সময় কখন?

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুলোর মধ্যে আসরের নামাজ হচ্ছে তৃতীয়। বিকেল বেলায় এই নামাজ আদায় করা হয়। সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই নামাজ আদায় করা যায়। আরবিতে আসরের নামাজ কে বলা হয় সালাতুল আসর।

আসর নামাজ কয় রাকাত?

আসরের নামাজ সর্বমোট ৮ রাকাত। এর মধ্যে চার রাকাত সুন্নত এবং বাকি চার রাকাত ফরজ।

ফরজ অংশ ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করতে হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে সে ক্ষেত্রে তার জন্য চার রাকাত ফরজ সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত করতে পারেন। কিন্তু নামাজ ৫ ওয়াক্ত পড়া আবশ্যক।

জুমার দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল:-

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূল পাক (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর না উঠে ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নে উল্লেখিত দরুদ শরীফ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব তার আমল নামায় লেখা হবে।

দোয়াটি হলো:

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়াসাল্লিম তাসলিমা।

আসরের নামাজের নিয়ত:

মূলত যেহেতু আসরের নামাজ দুইটি ভাগে পড়তে হয় সর্বপ্রথমে সুন্নত এবং এরপর ফরজ আলাদা আলাদা নিয়তে আদায় করতে হয়। এখন আমরা সেই আলাদা আলাদা নিয়ত গুলো আপনাদের সামনে উল্লেখ করছি।

চার রাকাত সুন্নত নামাজের আরবি:

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْعَصْرِسُنَّةُ رَسُوْلِ للَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা উচ্চারণঃ

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আসরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আকবর

বাংলা অর্থঃ

আছরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

চার রাকাত ফরজ নামাজের আরবি :

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ رَكْعَتِ صَلَوةِ الْعَصْرِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

বাংলা উচ্চারণঃ

নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আসরি ফারদুল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আকবর।

বিঃদ্রঃ-ঈমামের পিছনে পড়লে ফারদীল্লা-হি তাআ’লা বলার পরে ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম বলবে।

বাংলা অর্থঃ

আছরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।

অবশেষে:

আল্লাহ তায়াআলা সকল মুসলিম উম্মাহকে নামাজে মনোযোগী হওয়ার তাওফী দান করুন। আমাকে আড়ম্বর, অলসতা, অমনোযোগিতা থেকে মুক্তি দিন। আমিন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *