সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত

সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত

সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ :-

উচ্চারণ : হুআল্লা হুল্লাজি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাতি, হুয়ার রহমানুর রহিম। হুআল্লা হুল্লাজি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লোহি আম্মা ইয়ূশরিকুন। হুআল্লাহুল খলিকুল বা-রিউল মুছাওওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।

সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বাংলা অর্থ :-

অর্থ : ‘তিনিই আল্লাহ্ তা’আলা, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন, তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।’ (২২) ‘তিনিই আল্লাহ্ তিনি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্মশীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ্ তা’আলা তা থেকে পবিত্র।’ (২৩) ‘তিনিই আল্লাহ্ তা’আলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামগুলো তাঁরই। নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তার পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়। (সুরা হাশর, আয়াত : ২৪)

এ সম্পর্কে হাদীসে যা বলা হয়েছে (ফজিলত):

عن معقل ابن يسار عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ” من قال حين يصبح ثلاث مرات : أعوذ بالله السميع العليم من الشيطان الرجيم . وقرأ ثلاث آيات من آخر سورة الحشر وكل الله به سبعين ألف ملك يصلون عليه حتى مسى ، وإن مات في ذلك اليوم مات شهيدا ، ومن قالها حين يمسى كان بتلك المنزلة “

হযরত মা’কাল বিন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিন বার পড়বে “আউজুবিল্লাহিস সামীয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম”। তারপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত [ হুয়াল্লাহুল্লাজী লা-ইলাহা শেষ পর্যন্ত] তিলাওয়াত করবে। তাহলে আল্লাহ্ তা’আলা উক্ত ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা নিযুক্ত করেন। যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাতের দু’আ করতে থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে। [তথা মাগরিব থেকে সকাল পর্যন্তের জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা গুনাহ মাফীর জন্য দু’আ করে, আর সে সময়ে মারা গেলে শহীদের সওয়াব পাবে]।

রেফারেন্স নিম্নে দ্রষ্টব্য :-

  • সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৯০।
  • কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৩৫৯৭।
  • আত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং-৩৭৯
  • সুনানে দারেমী, হাদীস নং-৩৪২৫।
  • শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-২৫০২।
  • মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২০৩০৬।
  • মুসনাদুশ সাহাবাহ, হাদীস নং-২৯৭৯৫।
  • মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-২১৫৭।

এ হাদীসটি হাসান পর্যায়ের হাদীস।

প্রচলিত একটি ভুল পদ্ধতি;

গ্রাম বাংলায় এমনকি শহরেও এই প্রচলন’টি খুবই পরিলক্ষিত হয় যে, ফজরের নামাজ আদায়ান্তে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের নিয়ে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তেলাওয়াত করেন, এভাবে ইমাম পড়িয়ে দেয়া এ আমলের পদ্ধতি নয়। বরং একাকী পড়ার বিধান। কিন্তু যেহেতু মুসল্লিদের অনেকেই এটি জানে না, তাই ইমাম সাহেবগণ এটি পড়িয়ে থাকেন। যা হোক, প্রত্যেক মুসল্লীগণের উচিত এটি বিশুদ্ধভাবে শেখা এবং ইমামের অনুসরণে নয় বরং নিজে নিজে পড়ার চেষ্টা করা। আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের তৌফিক দান করুন। আ-মি-ন। ইয়া-রাব্বাল আলামীন।

পরিশেষে একটি আরজগুজার !

আমাদের প্রবন্ধটিতে যদি কোনো ধরনের ভুল থাকে। কোনো সহৃদয়বান ভাইয়ের/বোনের চোখে দৃষ্টিগোচর হয়, তা আমাদের নির্দ্বিধায় জানাতে পারেন। আমরা অত্যন্ত উপকৃত ও আনন্দিত হবো। আল্লাহ্ তা’আলা তৌফিক দান করুন। আমিন। ইয়া-রাব্বাল আলামীন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply